রবিবার, ১৫ জুলাই, ২০১২

মিয়ানমারে মুসলিম নিধন : নোবেল বিজয়ী সুচি’র দুঃখজনক নীরবতা

মিয়ানমারের আরাকান অঞ্চলে মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর সাম্প্রতিক নিধনযজ্ঞের বিরুদ্ধে উচ্চবাচ্য বা প্রতিবাদ না করায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ছেন দেশটির নোবেল বিজয়ী বিরোধী নেত্রী অং সান সুচি। অনেকেই তার এ নীরবতাকে রহস্যজনক এবং একইসঙ্গে দুঃখজনক বলে অভিহিত করেছেন। সরকারি ইন্ধনে চলা মুসলিম-বিরোধী এ দাঙ্গায় বহু মানুষ নিহত হলেও সুচির নীরবতায় হতাশ হয়েছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাধারণ মানুষ। এ জন্য তারা কথিত গণতন্ত্রী ও ‘বেসামরিক খোলসের সামরিক সরকার’-এর পাশাপাশি সুচিকেও অপরাধের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। তার এ নীরবতার কারণে এ সমস্যা দিন দিন প্রকট হচ্ছে বলেও মনে করেন তারা। সুচির মতো সংগ্রামী ও ‘আপোষহীন’ নেত্রীর এমন নীরবতার সুযোগে মিয়ানমারের সাবেক জান্তা ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট থিন সেইন বলেছেন, “চলমান সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে প্রায় দশ লাখ রোহিঙ্গা মুসলমানকে জাতিসংঘ পরিচালিত শরণার্থী শিবিরে পাঠানো।” তিনি আরো বলেছেন, “যদি তৃতীয় কোনো দেশ তাদেরকে গ্রহণ করতে রাজি হয় তাহলে আমরা তাদেরকে সেখানে পাঠাব এবং আমরা এ ইস্যুর এটাই সমাধান বলে মনে করি।”  তবে, জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশন এ ধারণাকে নাকচ করে দিয়েছে। জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক কমিশন বলছে, দশকের পর দশক বৈষম্যের কারণে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করা যায়নি বরং অচলাবস্থায় রয়ে গেছে। এসব রোহিঙ্গা মুসলমান তাদের ওপর চলাচলের বিধি-নিষেধের শিকার। শুধু তাই নয়- তারা ভূমির অধিকার, শিক্ষা ও সাধারণ সরকারি সেবা থেকেও বঞ্চিত। গত দু’বছর সরকারি নিপীড়নের কারণে বহু রোহিঙ্গা মুসলমান মিয়ানমার ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। দেশটির সরকার তাদেরকে সে দেশের নাগরিক বলে স্বীকার করে না বরং তাদেরকে অভিবাসী বলে মনে করে। অথচ, এসব রোহিঙ্গা মুসলমান কয়েকশ’ বছর ধরে মিয়ানমারে বসবাস করছে। মিয়ানমার সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্তকে অত্যন্ত বেদনাদায়ক বলে মন্তব্য করেছেন বহু আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক।

কোন মন্তব্য নেই: